রেজিনা বেগম একজন প্রখ্যাত বাঙালি লেখক, গবেষক এবং নারী মুক্তি আন্দোলনের ইতিহাসবিদ। তিনি ১৯৪৯ সালের ২৯ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন এবং সমাজ, রাজনীতি এবং ইতিহাসের বিভিন্ন দিক নিয়ে গবেষণা করেছেন। বিশেষ করে তিনি নারী অধিকার, স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের বিভিন্ন দিক নিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন। তার লেখনীতে বাঙালি নারীদের সংগ্রাম, তাদের রাজনৈতিক সচেতনতা এবং স্বাধীনতা আন্দোলনে তাদের ভূমিকা গভীরভাবে আলোচিত হয়েছে। রেজিনা বেগম নারী ও সমাজের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ নাম, এবং তার গবেষণাগুলি সমাজের নানা স্তরে নারী জাগরণ এবং তাদের অবদানের প্রতি আলোকপাত করে। রেজিনা বেগমের অন্যতম উল্লেখযোগ্য বই হলো "রাজনৈতিক আন্দোলনে বাংলার নারী (১৯০৫-৪৭)" এবং "বঙ্গবন্ধু ও অসহযোগ আন্দোলন"। "রাজনৈতিক আন্দোলনে বাংলার নারী (১৯০৫-৪৭)" বইটি বিশেষভাবে নারীদের ভূমিকা নিয়ে লেখা হয়েছে, যাদের অবদান স্বাধীনতা সংগ্রাম ও রাজনৈতিক আন্দোলনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ১৯০৫ থেকে ১৯৪৭ সালের মধ্যে বাংলার নারীরা কিভাবে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রাজনৈতিক আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন, তা এই বইয়ে চমৎকারভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এই সময়কালে নারীরা তাদের অধিকার এবং দেশের স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র সংগ্রাম, প্রতিবাদ এবং বিভিন্ন আন্দোলনে অংশ নেন। রেজিনা বেগম তার গবেষণায় নারীদের অবদানের দিকগুলো তুলে ধরে তাঁদের ইতিহাসে অবস্থিত অসীম সাহসিকতা এবং শক্তিকে প্রকাশ করেছেন। অন্যদিকে, "বঙ্গবন্ধু ও অসহযোগ আন্দোলন" বইটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা সংগ্রামের পটভূমি এবং তাঁর অসহযোগ আন্দোলনে নেতৃত্বের ভূমিকাকে বিশ্লেষণ করেছে। রেজিনা বেগম এই বইয়ে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন, তাঁর সংগ্রাম এবং বাংলার মানুষকে স্বাধীনতার জন্য একত্রিত করার অসাধারণ দক্ষতা তুলে ধরেছেন। এই বইটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হয়, যেখানে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা এবং স্বাধীনতা সংগ্রামে তার অগ্রণী ভূমিকা সমৃদ্ধভাবে বিশ্লেষিত হয়েছে। রেজিনা বেগম তার গবেষণার মাধ্যমে নারীর সামাজিক, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক অবদানকে গুরুত্ব দিয়েছেন এবং বিশেষ করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে নারীদের ভূমিকা আরও স্পষ্ট করেছেন। তার রচনা সমূহ আজও গবেষণার ক্ষেত্র হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ, এবং এটি বাংলা ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত।