শেখর বসু
শেখর বসু একজন বিশিষ্ট বাংলা লেখক, সাংবাদিক এবং সাহিত্য সমালোচক, যিনি মূলত রহস্য, কিশোর উপন্যাস এবং সাহিত্য সমালোচনা নিয়ে লিখেছেন। তিনি ১৯৪৫ সালে ভারতের কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তার লেখার মধ্যে ছিল সাহিত্যের বিভিন্ন ধারার চর্চা, বিশেষ করে রহস্য কাহিনী এবং কিশোর সাহিত্য। শেখর বসু বাংলা সাহিত্যে এক উজ্জ্বল নাম, বিশেষ করে তার রহস্য উপন্যাস এবং কিশোর উপন্যাসগুলোর জন্য পরিচিত। তার লেখার স্টাইল এবং বিষয়বস্তু তাকে পাঠকদের কাছে একটি আলাদা স্থান এনে দেয়। শেখর বসুর লেখা একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বই রয়েছে, যার মধ্যে "রহস্য উপন্যাস - ১, ২, ৩, ৪, ৫" সিরিজটি খুবই জনপ্রিয়। এসব বইয়ে তিনি রহস্য এবং থ্রিলারের ধরন অনুসরণ করে বেশ কিছু উত্তেজনাপূর্ণ কাহিনী তুলে ধরেছেন, যা পাঠকদের মগ্ন করে রাখে। তার "দশটি কিশোর উপন্যাস" এবং "বারোটি কিশোর-ক্লাসিক" বইগুলোর মাধ্যমে তিনি কিশোরদের জন্য এক ধরনের সাহসিকতা ও শিক্ষা প্রদান করেছেন, যেখানে গল্পের মাধ্যমে জীবনের বিভিন্ন মূল্যবোধ এবং চ্যালেঞ্জ তুলে ধরা হয়েছে। “সাহিত্য সাধনা ও সঙ্গিনী” এবং "সাহিত্য প্রতিচ্ছায়া" বইগুলোতে তিনি সাহিত্য ও তার প্রভাব সম্পর্কে গভীর চিন্তা-ভাবনা প্রকাশ করেছেন। এখানে তিনি সাহিত্য সাধনার বিষয়টি ভেবেচিন্তে, নানা দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করেছেন এবং একজন লেখক হিসেবে তার পথচলার গল্প শেয়ার করেছেন। "অন্তরঙ্গ জীবন ও সাহিত্য" বইটি লেখকের ব্যক্তিগত জীবন এবং সাহিত্য চর্চার সাথে সম্পর্কিত তার অভিজ্ঞতা ও দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে। “শ্রেষ্ঠ শিল্পী বারোজন” বইটিতে তিনি বাংলা সাহিত্যের ও শিল্পের মহান ব্যক্তিত্বদের নিয়ে আলোচনা করেছেন, যারা তাদের কাজের মাধ্যমে সাহিত্য এবং সংস্কৃতিতে বিশেষ অবদান রেখেছেন। “নেতাজীর সহধর্মিণী” বইটি নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোসের জীবন ও তার সহধর্মিণীকে কেন্দ্র করে লেখা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রচনা, যা ইতিহাসের একটি অজানা দিক তুলে ধরেছে। এছাড়া, “সেদিনের কলকাতা”, “দুঃখী ডাকাত” এবং “ছোটদের পঞ্চাশটি গল্প” বইগুলোও গুরুত্বপূর্ণ, যা বিশেষভাবে শিশুদের এবং সাধারণ পাঠকদের জন্য লেখা হয়েছে। শেখর বসু তার লেখার মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ সৃষ্টি করেছেন, যা প্রতিটি পাঠকের মনকে স্পর্শ করবে এবং পাঠকদের জীবনে গভীর প্রভাব ফেলবে। শেখর বসু একজন সাহিত্যের সাধক হিসেবে তাঁর লেখনীর মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যে এক আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি ও ভাবনা যোগ করেছেন, যা পাঠকদের নতুনভাবে ভাবতে এবং অনুভব করতে অনুপ্রাণিত করে।