তুষার চক্রবর্তী একজন প্রখ্যাত বাংলাদেশী লেখক, বিজ্ঞানী এবং গবেষক, যিনি বিশেষভাবে জিন, জীববিজ্ঞান, এবং সমাজতত্ত্ব নিয়ে কাজ করেছেন। তিনি ১২ নভেম্বর ১৯৭৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞান লেখক হিসেবে পরিচিত। তাঁর লেখায় বিজ্ঞান, সমাজ এবং ইতিহাসের সম্পর্ক ও প্রভাব অত্যন্ত গভীরভাবে আলোচনা করা হয়েছে, যা পাঠকদের চিন্তা ও বিশ্লেষণের খোরাক জোগায়। তুষার চক্রবর্তীর রচিত বইগুলোর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হল "জিন : ভাবনা, দুর্ভাবনা (জিনতত্ত্ব, সমাজ, ইতিহাস)", যেখানে তিনি জিন, জীববিজ্ঞান এবং তার সামাজিক প্রভাব সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। এছাড়া, "জৈবনিক : জীববিজ্ঞান দেশকাল বঙ্কিমচন্দ্র" বইয়ে তিনি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জীববিজ্ঞান সম্পর্কিত চিন্তাভাবনা এবং তার সময়কাল নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে জ্ঞানের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছেন। তার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বই "বিজ্ঞানের দায় বিজ্ঞানীর দায়িত্ব", যা বিজ্ঞানের সমাজে অবদান এবং বিজ্ঞানীদের দায়িত্ব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে। এছাড়া, "দ্যা বিডিএমও কম্পেন্ডিয়াম" ও "BDMO প্রস্তুতি" বই দুটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী, যেখানে তিনি BDMO (বাংলাদেশ ডিজিটাল মেধা অলিম্পিয়াড) পরীক্ষার প্রস্তুতি সম্পর্কিত তথ্য এবং কৌশল প্রদান করেছেন। তুষার চক্রবর্তী তাঁর লেখার মাধ্যমে শুধু জ্ঞানার্জন করেননি, বরং বিজ্ঞানকে সাধারণ পাঠকদের কাছে সহজ ও আকর্ষণীয় করে তুলে ধরেছেন। তাঁর রচনাবলী বিশেষ করে বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে সমাজ ও ইতিহাসের সম্পর্ককে নতুন করে বিশ্লেষণ করার একটি মহতী প্রয়াস।
বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের সফলতার গল্পের সাথে যে ব্যক্তির নাম ওতপ্রোতভাবে জড়িত, তিনি মুনির হাসান। তিনি একইসাথে একজন বিজ্ঞানী, লেখক, ব্লগার ও উদ্যোক্তা, যিনি তারুণ্য ও উদ্যোক্তা এই দুইয়ের মেলবন্ধনে বেকারত্বের বাঁধা ডিঙোতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য উৎসাহ জাগানিয়া প্লাটফর্ম ‘চাকরি খুঁজবো না, চাকরি দেবো’ এর সাড়া জাগানো পথচলা ও সাফল্যের পেছনেও রয়েছে এই মানুষটিরই হাত। মুনির হাসানের আরেকটি পরিচয় হলো- তিনি বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (BdOSN) এর সহকারী প্রতিষ্ঠাতা। বর্তমানে মুনির হাসান দৈনিক প্রথম আলোর যুব কর্মসূচী সমন্বয়কের কাজে নিয়োজিত আছেন। মুনির হাসানের জন্ম ১৯৬৬ সালের ২৯ জুলাই বন্দরনগরী চট্টগ্রামে। সেখানেই সেন্ট মেরিজ, মুসলিম হাই স্কুল ও মুসলিম এডুকেশন সোসাইটিতে শেষ করেন হাই স্কুলের পাঠ। বাকি শিক্ষাজীবন জুড়ে আছে চট্টগ্রাম কলেজ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম। বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডে অবদান ও সম্পৃক্ততার জন্য বন্ধু মহলে ‘ম্যাথ মুনির’ নামে পরিচিত হলেও বুয়েটে তাঁর পড়ার বিষয় ছিলো ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং। দৈনিক সংবাদের সাপ্তাহিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ফিচার পাতায় লেখালেখি করতে গিয়ে সাহচর্য পেয়েছেন আ. মু. জহুরুল হক, আবদুল্লাহ আল-মুতী, শরফুদ্দিন কিংবা এ আর খানের মতো বিজ্ঞান লেখক ও বিজ্ঞান কর্মীদের। তাঁদের অনুপ্রেরণায়ই বিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করার কাজে আরও উদ্যমী হয়েছিলেন। বিভিন্ন সময়ে ভোরের কাগজ ও প্রথম আলোর বিজ্ঞান বিষয়ক ফিচার পাতারও করেছেন সম্পাদনা। অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বে ২০০৩ সালে অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদের সাহচর্যে গড়ে তোলেন বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি। বর্তমানে সেই সফল কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বরত আছেন মুনির হাসান। তাঁর অসাধারণ সব কাজের সাথে তাল মিলিয়ে, অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে সময়ে সময়ে বেশ কিছু বইও লিখেছেন মুনির হাসান। মুনির হাসান এর বই সমগ্র এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- শরবতে বাজিমাত, গ্রোথ হ্যাকিং মার্কেটিং, গল্পে গল্পে ধাঁধা, অঙ্কের ধাঁধা ধাঁধায় অঙ্ক ইত্যাদি। মুনির হাসান এর বই সমূহ এর মধ্যে লেখকের বুয়েটে জীবন নিয়ে লেখা আত্মজৈবনিক বই ‘পড়ো পড়ো পড়ো’ পেয়েছে অসম্ভব পাঠকপ্রিয়তা। তাঁর জীবনেরই মতো মুনির হাসানের বই তাঁর পাঠকদের উদ্দীপিত করে নিজের পছন্দে নিজের জীবন বেছে নিতে ও গড়ে তুলতে।