এ এম হারুন-অর-রশিদ বাংলাদেশের একজন বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী। তিনি ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দে, পদার্থবিজ্ঞানে তাঁর অবদানের জন্য একুশে পদকে ভূষিত হোন।ড. রশীদের কর্মজীবন শুরু হয় ১৯৫৬ সালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এসসি. পাশ করার পরপরই চেয়ারম্যান এবং হেড অব দ্য ডিপার্টমেন্ট অধ্যাপক শচীন মিত্র তাঁকে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগদানের প্রস্তাব করেন। স্যারের কথামতো তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।
এরপর তিনি যোগ দেন ঢাকাস্থ আনবিক শক্তি কমিশনে (Atomic Energy Commision, Dhaka)। এখানে তিনি ১৯৬২ থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত প্রথমে সিনিয়র সায়েন্টিফিক অফিসার এবং পরবর্তীকালে প্রিন্সিপাল সায়েন্টিফিক অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
১৯৬৭ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত তিনি পাকিস্তানের ইসলামাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ইন্সটিটিউট-এর তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক এবং পরবর্তীকালে পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ১৯৭২ থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এবং বোস সেন্টার ফর এডভান্সড স্টাডিজ এন্ড রিসার্চ -এর পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭৯ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন এবং ১৯৮৫ থেকে অবসর গ্রহণের পূর্ব পর্যন্ত (১৯৯৩ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন) তিনি ঐ বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সেন্টারের পরিচালক হিসেবেও কাজ করেন।
১৯৯৩ সালে তিন বত্সরের জন্য ড. রশীদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বোস অধ্যাপক নিযুক্ত হন। তিনি ২০০৬ সালে ইউ.জি.সি. ( U.G.C.- University Grants Commission) প্রফেসর নিযুক্ত হন।
বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের সফলতার গল্পের সাথে যে ব্যক্তির নাম ওতপ্রোতভাবে জড়িত, তিনি মুনির হাসান। তিনি একইসাথে একজন বিজ্ঞানী, লেখক, ব্লগার ও উদ্যোক্তা, যিনি তারুণ্য ও উদ্যোক্তা এই দুইয়ের মেলবন্ধনে বেকারত্বের বাঁধা ডিঙোতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য উৎসাহ জাগানিয়া প্লাটফর্ম ‘চাকরি খুঁজবো না, চাকরি দেবো’ এর সাড়া জাগানো পথচলা ও সাফল্যের পেছনেও রয়েছে এই মানুষটিরই হাত। মুনির হাসানের আরেকটি পরিচয় হলো- তিনি বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (BdOSN) এর সহকারী প্রতিষ্ঠাতা। বর্তমানে মুনির হাসান দৈনিক প্রথম আলোর যুব কর্মসূচী সমন্বয়কের কাজে নিয়োজিত আছেন। মুনির হাসানের জন্ম ১৯৬৬ সালের ২৯ জুলাই বন্দরনগরী চট্টগ্রামে। সেখানেই সেন্ট মেরিজ, মুসলিম হাই স্কুল ও মুসলিম এডুকেশন সোসাইটিতে শেষ করেন হাই স্কুলের পাঠ। বাকি শিক্ষাজীবন জুড়ে আছে চট্টগ্রাম কলেজ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম। বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডে অবদান ও সম্পৃক্ততার জন্য বন্ধু মহলে ‘ম্যাথ মুনির’ নামে পরিচিত হলেও বুয়েটে তাঁর পড়ার বিষয় ছিলো ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং। দৈনিক সংবাদের সাপ্তাহিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ফিচার পাতায় লেখালেখি করতে গিয়ে সাহচর্য পেয়েছেন আ. মু. জহুরুল হক, আবদুল্লাহ আল-মুতী, শরফুদ্দিন কিংবা এ আর খানের মতো বিজ্ঞান লেখক ও বিজ্ঞান কর্মীদের। তাঁদের অনুপ্রেরণায়ই বিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করার কাজে আরও উদ্যমী হয়েছিলেন। বিভিন্ন সময়ে ভোরের কাগজ ও প্রথম আলোর বিজ্ঞান বিষয়ক ফিচার পাতারও করেছেন সম্পাদনা। অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বে ২০০৩ সালে অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদের সাহচর্যে গড়ে তোলেন বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি। বর্তমানে সেই সফল কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বরত আছেন মুনির হাসান। তাঁর অসাধারণ সব কাজের সাথে তাল মিলিয়ে, অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে সময়ে সময়ে বেশ কিছু বইও লিখেছেন মুনির হাসান। মুনির হাসান এর বই সমগ্র এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- শরবতে বাজিমাত, গ্রোথ হ্যাকিং মার্কেটিং, গল্পে গল্পে ধাঁধা, অঙ্কের ধাঁধা ধাঁধায় অঙ্ক ইত্যাদি। মুনির হাসান এর বই সমূহ এর মধ্যে লেখকের বুয়েটে জীবন নিয়ে লেখা আত্মজৈবনিক বই ‘পড়ো পড়ো পড়ো’ পেয়েছে অসম্ভব পাঠকপ্রিয়তা। তাঁর জীবনেরই মতো মুনির হাসানের বই তাঁর পাঠকদের উদ্দীপিত করে নিজের পছন্দে নিজের জীবন বেছে নিতে ও গড়ে তুলতে।