শৈলেশ দে একজন খ্যাতনামা বাংলা সাহিত্যিক, গবেষক এবং ইতিহাসবিদ, যিনি বিশেষভাবে ইতিহাস, জীবনী ও রাজনৈতিক বিষয়ে গবেষণা করেছেন। তিনি ১৯৩৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং তার সাহিত্যকর্মের মাধ্যমে ভারতীয় ইতিহাস ও বিশেষত ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে গভীরভাবে আলোচনা করেছেন। শৈলেশ দে তার লেখার মাধ্যমে ভারতীয় রাজনীতি, বিশেষত স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতাদের জীবনকথা ও সংগ্রামকে বিশ্লেষণ করেছেন এবং পাঠকদেরকে ভারতীয় ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়গুলো সম্পর্কে অবহিত করেছেন। শৈলেশ দে মূলত তার জীবনী গ্রন্থের জন্য খ্যাতি অর্জন করেছেন, যেখানে তিনি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের মহান নেতাদের জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছেন। তার উল্লেখযোগ্য বই “সুভাষচন্দ্র বসু: হিজ লাইফ অ্যান্ড স্ট্রাগল” বইটি সুভাষচন্দ্র বসুর জীবন ও সংগ্রামের ওপর বিস্তারিত আলোচনা করে। এই বইটিতে তিনি সুভাষচন্দ্র বসুর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, সংগ্রাম এবং স্বাধীনতা আন্দোলনে তার অবদান গভীরভাবে তুলে ধরেছেন। বইটি সুভাষচন্দ্র বসুর ব্যক্তিগত জীবন, দৃষ্টিভঙ্গি এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডকে নতুনভাবে মূল্যায়ন করেছে, যা পাঠকদেরকে এই মহান নেতার সংগ্রামের প্রতি নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে পরিচিত করে। আরেকটি উল্লেখযোগ্য বই “আমি সুভাষ বলছি”, যা সুভাষচন্দ্র বসুর ভাষণ ও লিখিত বক্তব্যের ওপর ভিত্তি করে রচিত, যেখানে তিনি সুভাষচন্দ্রের নিজস্ব কণ্ঠে তার জীবন ও দর্শন তুলে ধরেছেন। এই বইটি সুভাষচন্দ্র বসুর একান্ত বাচনভঙ্গি, তার দেশপ্রেম এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি গভীর প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করে। শৈলেশ দে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বই রচনা করেছেন “ওরা আকাশে জাগাতো ঝড়”, যা স্বাধীনতা সংগ্রামের সময়কার বিভিন্ন সংগ্রামীদের জীবন ও কাহিনী নিয়ে লেখা। এই বইটি বিশেষ করে তাদের জীবনের সংগ্রাম, ত্যাগ এবং দেশপ্রেমের প্রতি নিবেদিত একটি চমৎকার দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করে। এতে তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অতীতের সংগ্রামকে জীবন্ত করে তুলেছেন এবং ইতিহাসের সেই অন্ধকার অধ্যায়ের খুঁটিনাটি তুলে ধরেছেন। শৈলেশ দে তার লেখার মাধ্যমে ভারতীয় ইতিহাসের বহু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন, যা আমাদের ইতিহাস এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের ধারাকে নতুন করে চিহ্নিত করেছে। তার বইগুলো শুধু ভারতীয় ইতিহাসের গবেষকরা, পাঠকরা বা ছাত্রদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ও শ্রদ্ধা সৃষ্টিতেও সহায়তা করেছে। তার সাহিত্যকর্ম আজও ইতিহাসের প্রতি পাঠকদের আগ্রহ সৃষ্টি করে এবং তাদের জন্য নতুন পাঠের সুযোগ করে দেয়।