টমাস হ্যারিস (Thomas Harris) একজন প্রখ্যাত আমেরিকান লেখক, যিনি বিশেষভাবে থ্রিলার এবং সাসপেন্স ধরণের উপন্যাস লেখার জন্য পরিচিত। তিনি ১৯৪০ সালের ১১ এপ্রিল, আমেরিকার নর্থ টেক্সাসের এক শহরে জন্মগ্রহণ করেন। টমাস হ্যারিস বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত হন তার "হ্যানিবাল লেকটার" সিরিজের মাধ্যমে, যেখানে তিনি একজন মানসিকভাবে বিপরীত চরিত্র, ডক্টর হ্যানিবাল লেকটার, একজন মানসিক রোগী এবং হত্যাকারীর চরিত্র নির্মাণ করেন। তার লেখায় মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ, সাসপেন্স এবং ভয়াবহতা সজীবভাবে ফুটে ওঠে, যা পাঠকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তার লেখার সৃষ্ট চরিত্রগুলি সাধারণত গভীর মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ এবং তীব্র পরিশ্রমের ফলস্বরূপ তৈরি হয়, যা তাকে থ্রিলার লেখকদের মধ্যে একটি বিশেষ স্থান দিয়েছে। টমাস হ্যারিসের সবচেয়ে বিখ্যাত বইগুলির মধ্যে "হ্যানিবাল", "দ্য সাইলেন্স অব দ্য ল্যাম্বস", "রেড ড্রাগন", এবং "ক্যারি মোরা" উল্লেখযোগ্য। "দ্য সাইলেন্স অব দ্য ল্যাম্বস" (The Silence of the Lambs) হ্যারিসের সবচেয়ে জনপ্রিয় উপন্যাসগুলির মধ্যে অন্যতম। এই বইটির মধ্য দিয়ে তিনি হ্যানিবাল লেকটার চরিত্রকে আরও জনপ্রিয় করেন। বইটি একটি মনস্তাত্ত্বিক থ্রিলার, যেখানে ফেডারেল এজেন্ট ক্ল্যারিস স্টার্লিং এবং খ্যাতিমান মনস্তাত্ত্বিক চিকিৎসক এবং সিরিয়াল কিলার হ্যানিবাল লেকটার সম্পর্কের ভেতর দিয়ে এক ভয়ের যাত্রা শুরু হয়। বইটি ১৯৯২ সালে অস্কারে পুরস্কৃত সিনেমার রূপান্তরিত হয়েছিল, যা আরও বিশ্বব্যাপী টমাস হ্যারিসের খ্যাতি বৃদ্ধি করে। রেড ড্রাগন (Red Dragon) হ্যারিসের প্রথম হ্যানিবাল লেকটার উপন্যাস, যা ১৯৮১ সালে প্রকাশিত হয়। এই বইতে হ্যানিবাল লেকটার চরিত্র প্রথমভাবে পাঠকদের সামনে আসে এবং সেই সময় থেকেই লেকটার হয়ে ওঠে একটি কাল্পনিক সন্ত্রাসী চরিত্র, যা পরবর্তীতে বহু সিনেমা ও বইয়ের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়ায়। এটি হ্যারিসের একটি মনস্তাত্ত্বিক থ্রিলার, যেখানে একজন হত্যাকারী এবং তার পিছনে ছুটে চলা এক তদন্তকারীর কাহিনি বর্ণিত হয়। হ্যানিবাল (Hannibal) বইটি লেকটার সিরিজের তৃতীয় বই, যা ১৯৯৯ সালে প্রকাশিত হয়। এতে লেকটার চরিত্র আরও ভয়ের রূপে হাজির হয়, এবং তার পেছনে লুকানো গভীর মনস্তাত্ত্বিক জটিলতা এবং বিভ্রান্তি তুলে ধরা হয়। ক্যারি মোরা (Cari Mora) ২০১৯ সালে প্রকাশিত হয়, এটি একটি থ্রিলার যা অতীতের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানের ভয়াবহ ঘটনা তুলে ধরে। এটি হ্যারিসের অন্যান্য বইয়ের মতোই একে একে রহস্যের পরত খুলতে থাকে, যেখানে এক নতুন মুখের সহিত আগের গল্পগুলির সমান্তরালতা অনুভূত হয়। টমাস হ্যারিসের লেখাগুলো গভীর মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ, ভয়, সাসপেন্স এবং মানবিক অবস্থা নিয়ে কাজ করে। তার বইগুলোর মাধ্যমে তিনি অপরাধ এবং অপরাধী মনস্তত্ত্বের এক বিপরীত দিক দেখিয়েছেন, যা পাঠকদের কাছে ভীতির পাশাপাশি আচ্ছন্ন করে রাখে। হ্যারিসের কাজগুলি সাহিত্যের অন্যতম সেরা থ্রিলার হিসেবে গণ্য করা হয়, এবং তার সৃষ্ট চরিত্রগুলো পৃথিবীজুড়ে মানুষের মনে গভীর রেখাপাত করেছে।