স্যার আর্থার ইগনেতিয়াস কনান ডয়েল (২২শে মে ১৮৫৯ - ৭ই জুলাই ১৯৩০ এডিনবরা, স্কটল্যান্ড) তার শার্লক হোম্সের গল্পসমূহের জন্য বিখ্যাত হয়ে আছেন। এই অসামান্য প্রতিভাধর লেখকের অন্যান্য রচনার মধ্যে আছে কল্পবিজ্ঞান গল্প, নাটক, প্রেমের উপন্যাস, কবিতা, ননফিকশন, ঐতিহাসিক উপন্যাস এবং রম্যরচনা।
আর্থার কোনান ডয়েলের জীবন ছিল বহুমাত্রিক এবং রোমাঞ্চপূর্ণ। তিনি একাধারে ছিলেন একজন ইতিহাসজ্ঞ, তিমি শিকারী, ক্রীড়াবিদ, যুদ্ধ-সাংবাদিক এবং আত্মিকবাদী।
জীবনের প্রথমভাগে, তিনি এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভেষজবিদ্যা বিষয়ে পড়াশোনা করেন এবং শেষতক লন্ডনে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে শুরু করেন। ভেষজ-ব্যবসায় গা-ছাড়া ভাবের কারণে তার হাতে থাকত বিস্তর অবসর। এবং এমনি একসময়ে তিনি সুবিখ্যাত শার্লক হোম্স সিরিজের গল্পগুলি লিখতে শুরু করেন। তার প্রথম সাফল্য ছিল 'রক্তসমীক্ষা' (A Study in Scarlet)। এটি সর্বপ্রথম ১৮৮৭ সালে বীটনের বড়দিনের বার্ষিকীতে (Beeton's Christmas Annual) প্রকাশিত হয়। ১৮৯০ সালে 'চিহ্নচতুষ্টয়' (The Sign of Four) প্রকাশিত হওয়ার পর তিনি ভেষজ-ব্যবসা ছেড়ে দেন এবং লেখা-লেখিতে পুরোমাত্রায় আত্মনিয়োগ করেন। তিনি অনেক গল্প, কল্প-কাহিনী এবং ইতিহাস-কেন্দ্রিক রোমাঞ্চ কাহিনী লিখলেও বিখ্যাত চরিত্র শার্লক হোম্স-কে নিয়ে লেখা গোয়েন্দা-কাহিনীগুলিই তাকে বিশ্বজোড়া খ্যাতি এনে দিয়েছে। সত্য বলতে কি, এই হোমস্ চরিত্রটির উপর একঘেয়েমিজনিত বিরক্তির কারণে ডয়েল যখন 'শেষ সমস্যা' (The Final Problem)-এ হোম্স-কে মেরে ফেলেন, তখন জনতার দাবির মুখে হোমস চরিত্রটিকে অলৌকিকভাবে পুনরুজ্জীবিত করতে বাধ্য হন।
বাস্তব জীবনেও তিনি দু-দুবার গোয়েন্দাগিরি করে অন্যায়ভাবে দোষী-সাব্যস্ত ব্যক্তিদের নির্দোষ প্রমাণ করতে সফল হন। ডয়েলকে বোয়ের যুদ্ধের সময় দক্ষিণ আফ্রিকান এক মাঠ-চিকিৎসাকেন্দ্রে অবদান রাখার জন্য ১৯০২ সালে নাইট উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
রকিব হাসান (জন্ম: ১৯৫০, কুমিল্লা) একজন বাংলাদেশী গোয়েন্দা কাহিনী লেখক। তিনি সেবা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত তিন গোয়েন্দা নামক গোয়েন্দা কাহিনীর স্রষ্টা। তার লেখা এই কিশোর সিরিজটি প্রথম আলো পত্রিকার জরিপে বাংলাদেশের কিশোরদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাঠযোগ্য সিরিজ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। মূলত মূল নামে লেখালেখি করলেও জাফর চৌধুরী ছদ্মনামেও সেবা প্রকাশনীর রোমহর্ষক সিরিজ লিখে থাকেন। এছাড়াও আবু সাঈদ ছদ্মনামটিও ব্যবহার করেছেন গোয়েন্দা রাজু সিরিজটি লেখার সময়।
রকিব হাসান-এর লেখা প্রথম বই প্রকাশিত হয় ১৯৭৭ সালে, ছদ্মনামে । স্বনামে প্রথম প্রকাশিত বইটি ছিল অনুবাদগ্ৰস্থ, ব্রাম স্টোকারের ড্রাকুলা” । এরপর অনুবাদ করেছেন এরিক ফন দানিকেন, ফার্লে মোয়াট, জেরাল্ড ডুরেল-এর মত বিখ্যাত লেখকদের অনেক ক্লাসিক বই । অনুবাদ করেছেন মহাক্লাসিক অ্যারাবিয়ান নাইটস ও এডগার রাইস বারোজ এর টারজান সিরিজ । বড়দের উপযোগী তার লেখা কিছু রহস্য উপন্যাসও খুব জনপ্রিয়তা পেয়েছে । সবচেয়ে জনপ্রিয় হয়েছে ছোটদের জন্য লেখা তিন গোয়েন্দা সিরিজটি । এই রবিনকে নিয়ে লিখেছেন আরও দুটাে সিরিজ তিন বন্ধু' ও 'গোয়েন্দা কিশোর মুসা রবিন' । লিখেছেন কিশোর গোয়েন্দা” সিরিজ, খুদে গোয়েন্দা’ সিরিজ, জাফর চৌধুরী ছদ্মনামে রোমহর্ষক’ সিরিজ এবং আবু সাঈদ ছদ্মনামে গোয়েন্দা রাজু সিরিজ । রকিব হাসানের রোমহর্ষক সিরিজে রেজা ও সুজা দুই ভাইয়ের এডভেঞ্চার কাহিনি বর্ণিত হয়েছে। এই সিরিজটি থেকে তিন গোয়েন্দায় অনেকগুলো গল্প ভিন্ন নামে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া কিশোরদের জন্য বেশ কিছু ভূতের বই ও সাইন্স ফিকশনও লিখেছেন তিনি।
রকিব হাসান শুধুমাত্র তিন গোয়েন্দারই ১৬০টি বই লিখেছেন। এছাড়া কমপক্ষে ৩০টি বই অনুবাদ করেছেন।