আর্নেস্ট মিলার হেমিংওয়ে (২১ জুলাই ১৮৯৯ - ২ জুলাই ১৯৬১) একজন মার্কিন সাহিত্যিক ও সাংবাদিক ছিলেন। তার আইসবার্গ তত্ত্ব নামে পরিচিত নির্মেদ ও নিরাবেগী লেখনী বিংশ শতাব্দীর কথাসাহিত্যের ভাষাশৈলীতে ব্যাপক প্রভাব ফেলে; অন্যদিকে তার রোমাঞ্চপ্রিয় জীবন ও ভাবমূর্তি পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তাকে প্রশংসিত করে তোলে। বিংশ শতাব্দীর বিশের দশকের মাঝামাঝি থেকে পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত সময়ে তিনি তার অধিকাংশ সাহিত্যকর্ম রচনা করেছিলেন এবং ১৯৫৪ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেছিলেন। তিনি সাতটি উপন্যাস, ছয়টি ছোটগল্প সংকলন এবং দুইটি অকল্পিত সাহিত্য গ্রন্থ প্রকাশ করেছিলেন। তার মৃত্যুর পরে আরও তিনটি উপন্যাস, চারটি ছোটগল্প সংকলন এবং তিনটি অকল্পিত সাহিত্য গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছিল। তার প্রকাশিত গ্রন্থের অনেকগুলোই মার্কিন সাহিত্যের ধ্রুপদী বা চিরায়ত গ্রন্থ হিসেবে বিবেচিত হয়।
হেমিংওয়ে ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের ওক পার্কে জন্মগ্রহণ করেন এবং সেখানে বেড়ে ওঠেন। উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর তিনি কয়েক মাস দ্য ক্যানসাস সিটি স্টার সংবাদপত্রে প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে তিনি অ্যাম্বুলেন্স চালক হিসেবে তালিকাভুক্ত হন এবং ইতালীয় রণাঙ্গনে গমন করেন। ১৯১৮ সালে তিনি মারাত্মক আঘাত পান এবং বাড়ি ফিরে আসেন। তার যুদ্ধকালীন অভিজ্ঞতাই তার আ ফেয়ারওয়েল টু আর্মস (১৯২৯) উপন্যাসের অনুপ্রেরণা।
১৯২১ সালে তিনি হ্যাডলি রিচার্ডসনকে বিয়ে করেন এবং প্যারিস চলে যান। সেখানে তিনি বিদেশি প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করেন এবং "হারানো প্রজন্ম" নামে আধুনিক লেখক ও শিল্পীদের প্রবাসী সম্প্রদায় দ্বারা প্রভাবিত হন। তার প্রথম উপন্যাস দ্য সান অলসো রাইজেস ১৯২৬ সালে প্রকাশিত হয়। ১৯২৭ সালে হ্যাডলির সাথে তার বিবাহবিচ্ছেদ হয় এবং তিনি সাংবাদিক পলিন ফাইফারকে বিয়ে করেন। স্পেনের গৃহযুদ্ধ থেকে ফিরে আসার পর ফাইফারের সাথেও তার বিবাহবিচ্ছেদ হয়। যুদ্ধের অভিজ্ঞতা হতে তিনি ফর হুম দ্য বেল টোলস (১৯৪০) উপন্যাস রচনা করেন। ১৯৪০ সালে তিনি মার্থা গেলহর্নকে বিয়ে করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় লন্ডনে ম্যারি ওয়েলশের সাথে তার সাক্ষাতের পর গেলহর্নের সাথে তার বিবাহবিচ্ছেদ হয়। তিনি নরম্যান্ডি অবতরণ ও প্যারিসের স্বাধীনতার সময় উপস্থিত ছিলেন।
দ্য ওল্ড ম্যান অ্যান্ড দ্য সী (১৯৫২) প্রকাশের কিছুদিন পর হেমিংওয়ে আফ্রিকায় সাফারি ভ্রমণে যান। সেখানে তিনি পরপর দুটি বিমান দুর্ঘটনায় প্রায় মৃত্যুর হাত থেকে রেহাই পেলেও বাকি জীবনের বেশির ভাগ সময় তিনি শারীরিক পীড়া নিয়ে কাটান। তিনি ১৯৩০-এর দশকে ফ্লোরিডার কি ওয়েস্টে এবং ১৯৪০ ও ১৯৫০-এর দশকে কিউবায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। ১৯৫৯ সালে তিনি আইডাহোর কেচামে একটি বাড়ি ক্রয় করেন এবং সেখানে ১৯৬১ সালের মাঝামাঝি সময়ে তিনি মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেন।
প্রাবন্ধিক-গবেষক-শিশুসাহিত্যিক-অনুবাদক-সম্পাদক। জন্ম : ২৭ মার্চ ১৯৬৩, ঢাকায়। শিক্ষা : ১৯৭৮ সালে ঢাকা খিলগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস এস সি, শহীদ সোহরাওয়াদী কলেজ থেকে ১৯৮০ সালে এইচ এস সি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৮৩ সালে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ে স্নাতক এবং ১৯৮৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর। ছোটদের জন্য গল্প কবিতা ও প্ৰবন্ধ লিখে প্রথম দিকে পরিচিত হলেও সাম্প্রতিক কালে সমাজ-চিন্তা ও গবেষণামূলক প্রবন্ধ, সংস্কৃতি বিষয়ক রচনা ও সমালোচনা লিখছেন। গবেষণা করছেন বাংলা শিশুসাহিত্য নিয়ে। অনুবাদ-রূপান্তর ও পুনর্কথনমূলক রচনাও রয়েছে কিছু। রচিত-অনূদিত-সম্পাদিত বইয়ের সংখ্যা ষাটের অধিক। শিক্ষা ও সংস্কৃতিধর্মী প্রতিষ্ঠান বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের গঠন যুগে দীর্ঘ ১৭ বছর কর্মরত ছিলেন। সাংবাদিকতাও করেছেন কিছুকাল। এছাড়াও ‘বইয়ের জগৎ’ নামে বই-সমালোচনা বিষয়ক একটি ত্রৈমাসিক লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদনা করেছেন। বর্তমানে স্ত্রী অভিনয়শিল্পী শিরীন বকুল ও পুত্র প্রাকস্নাতক শিক্ষার্থী সুদীপ্ত প্রিয়দর্শন সহ নিউ ইয়র্কবাসী।