নিঃসঙ্গ সম্রাট
বরানগরের কাছে বি টি রোডের ধারে একটা লালচে রঙের দোতলা বাড়ির প্রায়ন্ধকার ঘরে অস্থির ভাবে পায়চারি করছেন এক প্রোঢ়। তাঁর মুখের চরুরুটের আগুন ছাড়া আর কিছুই দেখা যাচ্ছে না। মাঝে মাঝে তাঁর ভ্রম হয়, যেন নতুনভাবে সাজানো মঞ্চে সহসা জ্বলে উঠেছে পাদপ্রদীপের আলো । কানে আসছে দর্শকের উচ্ছ্বাস। সহসা তাঁর ভুল ভাঙে। তিনি উচ্চারণ করেন : ‘ইট ইজ দ্য কজ, মাই সোল....../হোয়াইট ইজ দা কজ?’ এই মানুষটির নাম শিশিরকুমার ভাদুড়ী । বাংলা রঙ্গমঞ্চের মুকুটহীন সম্রাট। অভিনয়ে তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই। একথা আপামর দর্শকই শুধু নয়, রঙ্গমঞ্চে তাঁর প্রবল প্রতিপক্ষরাও মানতেন। অভিনয়ে তিনি মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখতে পারেন দেশি-বিদেশি সব দর্শককে। কিন্তু অভিনয় নয়, তাঁর বেদনা অন্যখানে। শিশিরকুমারের স্বপ্ন ছিল, বিদেশি প্রকরণের শৃঙ্খল থেকে বাংলা নাটককে মুক্ত করে, তাকে তার নিজস্ব ভূমিতে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করবেন। অথচ যতবার নতুন কিছু করতে চেয়েছেন, দর্শকরা প্রত্যাখ্যান করেছে। শিল্পের কাছে সৎ থাকতে গিয়ে ব্যবসার দিকটি সামলাতে পারেননি। ক্রমশ দেউলিয়া হয়ে গিয়েছেন। বরানগরের ওই বাড়ির শেষ আশ্রয় থেকেও আজ দূর করে দেওয়া হচ্ছে তাকে। সন্ধ্যার অন্ধকারে নিরাভরণ ঘরটিতে একরাশ বই, রবীন্দ্রনাথ-শেকস্পিয়রের পঙ্ক্তি আর কঙ্কারবতীর স্মৃতি নিয়ে নির্জন ঘরে তাঁর রাজকীয় পদচারণা। সেই কঙ্কাবতী, যে তাঁর সন্তানকে গর্ভে ধারণ করেছিল। কিন্তু মাত্র বাইশ বছর বয়সে মারা যাওয়ার আগে তার খেদোক্তি শিশিরের ভাইয়ের কাছে, তোর দাদা কিছুতেই আমাকে বিয়ে করলেন না। .. এক বর্ণময় জীবন নিয়ে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বিস্ফোরক ও অনন্যসাধারণ উপন্যাস ‘নিঃসঙ্গ সম্রাট’।
বরানগরের কাছে বি টি রোডের ধারে একটা লালচে রঙের দোতলা বাড়ির প্রায়ন্ধকার ঘরে অস্থির ভাবে পায়চারি করছেন এক প্রোঢ়। তাঁর মুখের চরুরুটের আগুন ছাড়া আর কিছুই দেখা যাচ্ছে না। মাঝে মাঝে তাঁর ভ্রম হয়, যেন নতুনভাবে সাজানো মঞ্চে সহসা জ্বলে উঠেছে পাদপ্রদীপের আলো । কানে আসছে দর্শকের উচ্ছ্বাস। সহসা তাঁর ভুল ভাঙে। তিনি উচ্চারণ করেন : ‘ইট ইজ দ্য কজ, মাই সোল....../হোয়াইট ইজ দা কজ?’ এই মানুষটির নাম শিশিরকুমার ভাদুড়ী । বাংলা রঙ্গমঞ্চের মুকুটহীন সম্রাট। অভিনয়ে তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই। একথা আপামর দর্শকই শুধু নয়, রঙ্গমঞ্চে তাঁর প্রবল প্রতিপক্ষরাও মানতেন। অভিনয়ে তিনি মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখতে পারেন দেশি-বিদেশি সব দর্শককে। কিন্তু অভিনয় নয়, তাঁর বেদনা অন্যখানে। শিশিরকুমারের স্বপ্ন ছিল, বিদেশি প্রকরণের শৃঙ্খল থেকে বাংলা নাটককে মুক্ত করে, তাকে তার নিজস্ব ভূমিতে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করবেন। অথচ যতবার নতুন কিছু করতে চেয়েছেন, দর্শকরা প্রত্যাখ্যান করেছে। শিল্পের কাছে সৎ থাকতে গিয়ে ব্যবসার দিকটি সামলাতে পারেননি। ক্রমশ দেউলিয়া হয়ে গিয়েছেন। বরানগরের ওই বাড়ির শেষ আশ্রয় থেকেও আজ দূর করে দেওয়া হচ্ছে তাকে। সন্ধ্যার অন্ধকারে নিরাভরণ ঘরটিতে একরাশ বই, রবীন্দ্রনাথ-শেকস্পিয়রের পঙ্ক্তি আর কঙ্কারবতীর স্মৃতি নিয়ে নির্জন ঘরে তাঁর রাজকীয় পদচারণা। সেই কঙ্কাবতী, যে তাঁর সন্তানকে গর্ভে ধারণ করেছিল। কিন্তু মাত্র বাইশ বছর বয়সে মারা যাওয়ার আগে তার খেদোক্তি শিশিরের ভাইয়ের কাছে, তোর দাদা কিছুতেই আমাকে বিয়ে করলেন না। .. এক বর্ণময় জীবন নিয়ে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বিস্ফোরক ও অনন্যসাধারণ উপন্যাস ‘নিঃসঙ্গ সম্রাট’।
Writer |
|
Publisher |
|
ISBN |
9788177565102 |
Language |
Bengali / বাংলা |
Country |
India |
Format |
Hardcover |
First Published |
April 2005 |
Pages |
170 |