সুদীপ্ত সালাম বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত লেখক, গবেষক এবং ফটোসাংবাদিক, যিনি ফটোগ্রাফি এবং সাহিত্য জগতে তার অনন্য অবদানের জন্য বিশেষভাবে সমাদৃত। তিনি ১৯৭৮ সালে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। জীবনের শুরু থেকেই শিল্প, সাহিত্য এবং ফটোগ্রাফির প্রতি তার গভীর আগ্রহ ছিল, যা পরবর্তীকালে তার সৃজনশীল জীবনের মূল চালিকাশক্তি হয়ে ওঠে। সুদীপ্ত সালামের সাহিত্যকর্মে ফটোগ্রাফির তাত্ত্বিক এবং ব্যবহারিক দিক যেমন ফুটে ওঠে, তেমনই তার রচনায় সমসাময়িক সমাজ, সংস্কৃতি এবং রাজনীতির প্রতিচ্ছবি দেখা যায়। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে "বাংলা ফটোগ্রাফিসাহিত্যের ধারা," যা বাংলা ফটোগ্রাফি এবং এর ইতিহাস নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করে। "সত্য মিথ্যা মিথ" এবং "ফটোক্তি" বইগুলোতে ফটোগ্রাফির দার্শনিক এবং সামাজিক দিক নিয়ে গভীর বিশ্লেষণ রয়েছে। "ফটোগ্রাফি" এবং "ফটোগ্রাফি ডিকশনারি" বইগুলোতে তিনি ফটোগ্রাফির মৌলিক বিষয়গুলোকে সহজ এবং তথ্যবহুলভাবে উপস্থাপন করেছেন। তিনি শুধু তাত্ত্বিক গবেষণাতেই সীমাবদ্ধ থাকেননি; তার "গুলশান ট্রাজেডি ও আল-কায়দা নেটওয়ার্ক" বইয়ে তিনি একটি নৃশংস সন্ত্রাসী হামলার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ তুলে ধরেছেন, যা ফটোসাংবাদিকতার দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ। "ফটোসাংবাদিকের নোটবুক" তার বাস্তব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে রচিত, যা ফটোসাংবাদিকতার চ্যালেঞ্জ এবং প্রাপ্তি নিয়ে আলোকপাত করে। "আলোকচিত্রপুর" বইটি আলোকচিত্রের জগতকে নিয়ে রচিত এক অসাধারণ সাহিত্যকর্ম, যেখানে শিল্প এবং সাহিত্যের এক অপূর্ব মেলবন্ধন দেখা যায়। "দশটি হিন্দি গল্প" বইটি তার বহুমুখী প্রতিভার প্রতিফলন, যা ভাষা ও সংস্কৃতির সীমানা অতিক্রম করে। সুদীপ্ত সালামের কাজ শুধুমাত্র ফটোগ্রাফি বা সাহিত্য জগতেই সীমাবদ্ধ নয়; তার লেখনীতে তিনি সমাজের নানামুখী সমস্যার ওপরও আলোকপাত করেছেন। তার বইগুলোতে ইতিহাস, সংস্কৃতি, প্রযুক্তি এবং মানবিকতার মেলবন্ধন রয়েছে। তার সৃষ্টিশীল কর্মজীবন এবং অগাধ জ্ঞানের কারণে তিনি শুধু একজন লেখক নন, বরং বর্তমান সময়ের এক গুরুত্বপূর্ণ চিন্তাবিদ হিসেবেও বিবেচিত। বর্তমানে তিনি আলোকচিত্র শিল্প এবং সাহিত্যকে আরও সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছেন, এবং তার কাজ নতুন প্রজন্মের ফটোগ্রাফার ও লেখকদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছে।