সুজন দাশগুপ্ত
সুজন দাশগুপ্ত একজন প্রতিশ্রুতিশীল এবং প্রথাবিরোধী বাংলা লেখক, যিনি গোয়েন্দা এবং রহস্য সাহিত্যে এক অনন্য স্থান অধিকার করেছেন। তার লেখার মধ্যে ধ্রুপদী গোয়েন্দা কাহিনী, বুদ্ধির উৎকর্ষ এবং মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণের সংমিশ্রণ রয়েছে। তিনি বিশেষভাবে পরিচিত 'একেনবাবু' সিরিজের জন্য, যা বাংলা গোয়েন্দা সাহিত্য জগতের একটি উল্লেখযোগ্য দিক হয়ে উঠেছে। একেনবাবু চরিত্রটি তার শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি, যা পাঠকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। একেনবাবু, যিনি একজন বুদ্ধিদীপ্ত এবং ঠান্ডা মস্তিষ্কের গোয়েন্দা চরিত্র, তার কাহিনীগুলো মজবুত প্লট, আকর্ষণীয় রহস্য এবং সুনিপুণ তদন্তের মাধ্যমে পাঠকদের মুগ্ধ করেছে। সুজন দাশগুপ্তের "একেনবাবু সমগ্র" বইটি একাধিক খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে প্রতিটি খণ্ডে একেনবাবুর নতুন নতুন কাহিনী তুলে ধরা হয়েছে। এই সিরিজের প্রথম খণ্ড থেকে ষষ্ঠ খণ্ড পর্যন্ত তার লেখার গভীরতা, চরিত্র নির্মাণ এবং রহস্যের চমৎকার বুনন পাঠকদের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে। "একেনবাবু সমগ্র" ছাড়াও, তিনি 'ধাঁধাপুরী', 'নির্বাচিত একেনবাবু' এবং আরও অনেক কাব্যিক ও গল্পধর্মী বই লিখেছেন, যা বাংলা সাহিত্যের সোনালী অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হয়। তার লেখনির অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল তার নিখুঁত ভাষার ব্যবহার এবং মানবিক মূল্যবোধের প্রতি তার আন্তরিক শ্রদ্ধা। তিনি শুধু একজন সাহিত্যিকই ছিলেন না, বরং ছিলেন একজন কৃতজ্ঞ পাঠক, যিনি নিজে বই পড়তে ভালোবাসতেন এবং সেই ভালোবাসা থেকেই নতুন কিছু লিখে দেখাতে চেয়েছিলেন। সুজন দাশগুপ্তের গল্পগুলির মধ্যে গভীর মনস্তাত্ত্বিক অনুসন্ধান এবং তীক্ষ্ণ বুদ্ধির প্রেক্ষাপট ছিল, যা পাঠককে শুধু বিনোদনই দেয় না, বরং চিন্তা করতে বাধ্য করে। বঙ্গ সাহিত্যিকদের মধ্যে সুজন দাশগুপ্তের একটি স্থায়ী প্রভাব রয়েছে, এবং তিনি সাহিত্য জগতে নতুন পথ উন্মুক্ত করেছেন। যদিও তার মৃত্যুসাল সম্পর্কে বিস্তারিত কোনো নির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি, তবে তার সাহিত্যকর্ম আজও জীবিত, যা ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।