হলুদ বসন্ত
৳ 500.00 ৳ 450.00
৳ 500.00
হলুদ বসন্ত
কথাসাহিত্যফোনটা বাজছিল।
অন্য প্রান্তে ফোনটা কুরর- কুর কুরর- কুর করে কোনও মেঘলা দুপুরের কামাতুরা কবুতরের কথার মতো বাজছিল। শুনতে পাচ্ছিলাম। এখন রাত প্রায় সাড়ে ন’টা। টেলিফোনটা ওদের বাড়ির সিঁড়িব কাছে আছে। এখন বাড়িতে কে কে থাকতে পারে? সুজয় নিশ্চয়ই আড্ডা মারতে বেরিয়েছে। কদিন বাদে দোল। পাড়ায় দোল-পূর্ণিমার ফাংশন হবে। তাই নিয়ে পাড়ার রুস্তমরা ব্যস্ত। ফাংশন না কচু। ইলিশ মাছের ঝোল দিয়ে ভাত খেয়ে রেলিশ করে কিছু মেয়ে দেখা। রুস্তমদের রং ফিকে হয় না। বুকের লোম পেকে গেলেও না। বেশ আছে ওরা। টেরিলিন-টেরিকটে মোড়া বৃদ্ধ বালখিল্যের দল। নয়নার মা নিশ্চয়ই ঠাকুরঘরে চুপ করে বসে আছেন। এমন ভাব, যেন পৃথিবীর যাবতীয় ঘটনা-দুর্ঘটনা সব ওই ঠাকুরঘরের কস্ট্রোলরুম থেকেই রেডিয়ো কস্ট্রোলে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে।
ফোনটা বাজছেই- বাজছেই- বাজছেই।
নয়না এখন কী করছে? বোধহয় ঘুমুচ্ছে। সারাদিন পরিশ্রম তো কম নয়। নয়নার কথা ভাবলে আশ্চর্য লাগে। ওর সমবয়সি মেয়েদের পটভূমিতে ও বর্ষার জল-পাওয়া মৌরলা মাছের মতো লাফায়, অথচ ও আমার কাছে এলে শীতের সংকোশ নদীর ঘরেয়া মাছের মতো ধীরা হয়ে থাকে। আস্তে মাথা দোলায়, আলতো করে চোখ তুলে চায়, মুখে যত না বলে, চোখ দিয়ে তার চেয়ে বেশি কথা বলে। ওকে বুঝতে পারি না— ওকে একটুও বুঝতে পারি না। অথচ ওকে কী করে বোঝাই যে ওর এক চিলতে হাসি, ওর এক ঝিলিক চোখ চাওয়া- এইসব সামান্য সামান্য দান আমার সমস্ত সকাল, আমার সমস্ত দিন কী অসামান্য মহিমায় মহিমামণ্ডিত করে তোলে। গত পাঁচ বছর ধরে কখনও এ কথাটা ওকে বোঝাতে পারিনি- কিংবা ও বুঝলেও, না বোঝার ভান করে থেকেছে৷
Once the user has seen at least one product this snippet will be visible.